শনিবার

,

১০ই মে, ২০২৫

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সক্ষমতা নিয়ে সংশয় বাড়ছে: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশ ত্যাগসহ সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা নিয়ে জনগণের মধ্যে ক্রমশ সংশয় তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শুক্রবার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকার ফার্মগেটের খামারবাড়ি এলাকার এক মিলনায়তনে ইস্টার রিইউনিয়ন উপলক্ষে বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরাম এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা যদি সাম্প্রতিক ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করি, তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা নিয়ে বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ ও পেশাজীবীদের মধ্যে সংশয় বৃদ্ধি দেখতে পাই।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণের কাছে তার দল দায়বদ্ধ। তাই একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনিপি এখনও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত রেখেছে।

২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনকে র‌্যাব সদস্যরা অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী কোথায় আছেন, সে বিষয়ে আমরা এখনো কোনো তথ্য পাইনি। স্বৈরাচারী শাসনামলে শুধু সুমন নয়, ঢাকাসহ সারা দেশে অসংখ্য মানুষকে গুম, নির্যাতন ও হত্যা করা হয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা উল্লেখ করেন, সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি ২০১৪ সালে স্বৈরাচারী শাসনামলে নিখোঁজদের পরিবারকে একত্রিত করে ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত উদ্বেগ ও বিস্ময়ের বিষয় যে, পুলিশ প্রশাসন গতকাল সন্ধ্যায় সুমনের বোনকে গ্রেপ্তার করতে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে।’

তারেক বলেন, পুলিশ পরে দাবি করেছিল সুমন নিখোঁজের বিষয়টি তারা জানে না।

তিনি বলেন, ‘তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া যাক, সুমনের ঘটনাটি সম্পর্কে তারা অবগত ছিলেন না। কিন্তু স্বৈরাচারী শাসনামলে দায়িত্ব পালন করা একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি বৃহস্পতিবার ভোরে বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছাড়তে পেরেছেন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গত বছরের ৫ আগস্ট পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার মতোই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

তারেক বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন দাবি করছে, হামিদের দেশত্যাগের বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। ‘গতকাল থেকে আমি অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং প্রত্যেকেই প্রশ্ন করছে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসলে কী জানে।’

একই সঙ্গে অভিযোগ উঠছে যে, সম্ভবত, পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক ও তাদের সহযোগীদের নিরাপদে দেশ ছাড়ার সুযোগ তৈরি করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের নামে সময় নষ্ট করছে।

অন্যদিকে বিভিন্ন ইস্যুতে স্বৈরাচারবিরোধী বা ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে সূক্ষ্মভাবে বিভাজনের বীজ বপনের ক্ষেত্র তৈরি করার চেষ্টা হতে পারে। এসব বিষয় বারবার মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে।

পলাতক স্বৈরাচারের সহযোগীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রও হয়ত তৈরি করতে চাচ্ছে। এ বিষয়গুলো ঘুরেফিরে মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, এ দেশটা কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। দেশটা আমার, আপনার আমাদের সবার। ফ্যাসিবাদের পতনের পর দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অপার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গণতান্ত্রিক ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে।