ভারত-পাকিস্তান চলমান উত্তেজনা আগের যেকোনো সময়ের থেকে তীব্রতর হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভারতের ১৫ শহরে পাকিস্তানের হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে ভারত। এরপর লাহোরে পাল্টা আঘাত হেনে পাকিস্তানকে জবাব দিয়েছে বলে দাবি করে দেশটি। প্রতিবেশি দুই দেশের ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উপমহাদেশের পারমাণবিক শক্তিধর দেশদুটির সম্পর্ক।
নয়াদিল্লি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও গুজরাটের ১৫ শহরে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। তবে হতাহত ও ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে নিশ্চিত করেনি তারা।
ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। এর পরই পাকিস্তানি আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার ও অন্যান্য ব্যবস্থা লক্ষ্য করে হামলা চালায় ভারত। এতে লাহোরের একটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘অকার্যকর’ হয়ে যায়।
ভারতের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে শ্রীনগর, পাঠানকোট, অমৃতসর, লুধিয়ানা, চণ্ডীগড়সহ একাধিক শহরে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়। রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম দিয়ে এসব হামলা প্রতিহত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদ দাবি করেছে তাদের গুলি ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভারতের অর্ধশত সেনা নিহত হয়েছে। দেশটির তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারা পাকিস্তানের পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, আমাদের সৈন্যরা বৃহস্পতিবার সকালে নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। এতে দেশটির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এতে বহু সৈন্য হারিয়েছে ভারত। তবে এ বিষয়ে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভারতের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার একাধিক ভারতীয় ড্রোন তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনের চেষ্টা করে। এ সময় পাক বাহিনী ভারতের অন্তত ২৫টি ড্রোন ভুপাতিত করে। ইসরাইলের তৈরি এসব ড্রোনের ছবি ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগে বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে কমপক্ষে ৩১ জন নিহত এবং আহত হয় আরো অনেকে। জবাবে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তানও। এতে ১৫ ভারতীয় নাগরিকের প্রাণহানি ও বেশ কয়েকজন আহত হয়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হামলায় অংশ নেওয়া ভারতের পাঁচটি জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করেছে। কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেডের সদর দপ্তর ও তল্লাশিচৌকিও গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছে তারা।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ভূপাতিত করা পাঁচটি ভারতীয় জঙ্গি বিমানের মধ্যে তিনটি রাফাল, একটি রুশ এসইউ-৩০ ও একটি মিগ-২৯ জঙ্গি বিমান।
দুই দেশের সংঘাতে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী দুপক্ষেরই বেসামরিক নাগরিকেরা। আতঙ্কিত দুদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর বাসিন্দারা।