বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা হিসেবে নতুন তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে চলমান বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বসন্তকালীন সম্মেলনে সাংবাদিকদের এমন তথ্য দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
আমেরিকার স্থানীয় সময় সোমবার সকালে এই সম্মেলন শুরু হয়ে ২৬ এপ্রিল শনিবার সমাপ্ত হয়।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফের) ঋণ কর্মসূচির আওতায় প্রতিশ্রুত ৪৭০ কোটি ডলারের মধ্যে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে। বাকি ২৩৯ কোটি ডলারের পরবর্তী দুটি কিস্তি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। সেই আশঙ্কা কেটে গেছে।
এ ছাড়া দেশের ব্যাংক খাতে সমস্যা জর্জারিত ব্যাংকগুলোর মার্জারে কারিগরি সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ।
বাংলাদেশের ১৫ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদল অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। সভার শুরুর দিনেই আইএমএফের প্রতিশ্রুত ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় নিয়ে আলোচনা করে বাংলাদেশ। নীতিগতভাবে আইএমএফ চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশ আশা করছে দ্রুতই এই অর্থ পাবে।
বিশ্বব্যাংকের সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত দলিলাদি উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া এবারের সম্মেলনে বিকল্প অন্যান্য ঋণ সুবিধা আদায় ও দেশের সমস্যা জর্জরিত ব্যাংকের একীভূতকরণ বিষয়ে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফেরাতে ও খেলাপিদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশের সুবিধা দিতে রাজি বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ।
ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আইএমএফের প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের বিষয়ে তাদের দেওয়া কাঠামোগত সংস্কারের প্রায় সবই বাংলাদেশ পূরণ করেছে। তাই পরবর্তী কিস্তির ঋণ পাওয়া নিয়ে বড় কোনো অনিশ্চয়তা নেই। এ ছাড়া সব কিছু ঠিক থাকলে বাজেট সহায়তার অর্থ চলতি জুনে পাওয়া যাবে। ২০২৬ সালে আমাদের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হবে। ফলে স্বল্প সুদে বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন হবে। তাই আমরা বিকল্প চ্যানেল খুঁজছি। আমরা বিভিন্ন দেশ ও বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে বসেছি। জাপান ও ইউএস ব্যাংক কমিউনিটির সঙ্গে বসেছি। বেশ কিছু অগ্রগতি আছে।
সমস্যা জর্জরিত ব্যাংকগুলোকে মার্জার (একীভূত) করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যাংক মার্জারে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি অর্থায়নে সম্মত হয়েছে। ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন করা হচ্ছে সুশাসন প্রতিষ্ঠায়। আরো কিছু জায়গায় কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ব্যাংক যাতে তাদের নিয়ম-নীতি মেনে চলে সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। আমাদের তদারকিতে অনেক ব্যাংক ভালো কাজ করছে। ব্যাংকগুলো যাতে ভালোভাবে চলে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে বের হতে পারে, সেই কাজ করা হচ্ছে।’