রবিবার

,

২৭শে এপ্রিল, ২০২৫

নতুন উদ্যমে জেগে ওঠার প্রেরণা বৈশাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

পুরোনো বছরকে বিদায় দিয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ কে বরণ করে নিতে প্রস্তুত সারাদেশের মানুষ। রাত পেরোলেই বর্ণাঢ্য সব আয়োজনে নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে দেশবাসী।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাণীতে বলেছেন, ‘আসুন, আমরা বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে।

প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে বাংলাসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ একসঙ্গে উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এবারের প্রতিপাদ্য ‘নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

নববর্ষের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পহেলা বৈশাখ শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পার্বত্য কমপ্লেক্স থেকে তিন পার্বত্য জেলার শোভাযাত্রা।

এ বছর বাঙালি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, মনিপুরী ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী এবং নারী ফুটবলারদের অংশগ্রহণে সর্বজনীন শোভাযাত্রা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পহেলা বৈশাখ সকালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের এবং ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে সুরের ধারার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ, গারো সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজন করবে। বাংলা একাডেমি ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের আয়োজনে একাডেমি প্রাঙ্গণে সাত দিনব্যাপী নববর্ষের মেলা, আলোচনা সভাসহ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হবে। নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ক্রোড়পত্রের পরিবর্তে পত্রিকাসমূহে বিশেষ ফিচার প্রকাশ করা হবে।

পহেলা বৈশাখে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় একটি বর্ণাঢ্য ড্রোন শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত দপ্তরসমূহ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আলোচনা সভা, কুইজ প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে।

প্রতিটি জেলা, উপজেলায় পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সাড়ম্বরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। সকল কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) ঐতিহ্যবাহী বাংলা খাবার সরবরাহ করা হবে। সকল জাদুঘর ও প্রত্নস্থান সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। এছাড়া বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনসমূহও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

নববর্ষ কনসার্টে শুরুতেই পারফরম্যান্স করবে বান্দরবানের বেসিক গিটার লার্নিং স্কুল। এরপর গারো জাতিগোষ্ঠীর ব্যান্ড এফ মাইনর ২টি সংগীত পরিবেশন করবে। সমবেত সংগীত ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি সকল শিল্পীরা পরিবেশন করবেন। দুটি একক সংগীত পরিবেশন করবে মিঠুন চক্র এবং ‘দেওরা’সহ আরো ১ টি ঐতিহ্যবাহী পালা পরিবেশন করবেন ইসলামউদ্দিন পালাকার। এরপর দ্বৈত ও ২টি একক সংগীত পরিবেশন করবেন রাকিব ও সাগর দেওয়ান এবং ২টি দ্বৈত সংগীত পরিবেশন করবেন রাকিব ও আরজ আলী ওস্তাদ। ‘চলো নীরালায়’সহ ৩টি একক সংগীত পরিবেশন করবেন আতিয়া আনিশা, ‘মাঝে মাঝে তুমি এলে’, ‘মানুষ কেন এরকম’ ও ‘গল্প না’ গান ৩টি পরিবেশন করবেন আহমেদ হাসান সানি এবং জুলাই আন্দোলনের গানসহ ৩টি গান পরিবেশন করেন পারশা। এরপর ‘ব্যান্ড সংগীত’ পরিবেশন করেন অ্যাশেজ ব্যান্ড। সন্ধ্যা ৭ টায় শুরু হবে আকর্ষণীয় ‘ড্রোন শো’।