বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় আওয়ামীপন্থী ৬৪ আইনজীবীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। রবিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। তিনজন পালিয়ে যাওয়ায় ৬১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে এ মামলায় ১৮ নারী আইনজীবীসহ ১৯ জনের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
ঢাকা মহানগর আদালতের একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
জামিন নামঞ্জুর হওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান মানিক, গাজী শাহ আলম, মাহবুবুর রহমান, আসাদুর রহমান রচি, ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের সাবেক পিপি নজরুল ইসলাম শামীম। জামিন পাওয়া আসামিদের মধ্যে আবু সাঈদ সাগর, শারমিন সুলতানা হ্যাপি, সালেহা আক্তার শিল্পী, জেসমিন আক্তার, তাসলিমা ইয়াসমিন নদী, শিখা ইসলাম, মিতা, শায়লা পারভীন পিয়া ও সালমা হাই টুনি রয়েছেন।
জানা গেছে, এ মামলার এজাহার নামীয় ১১৫ আইনজীবী হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন পান।
এই অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ সোমবার শেষ হবে। এ জন্য হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়া ৮৩ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ৯ জনের জামিন মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া ৬৪ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তবে তিনজন আদেশ শুনে আদালত থেকে পালিয়ে যাওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি আওয়ামীপন্থী ১৪৪ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী বাবু।
কোতয়ালী থানায় দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বেলা ১২ টার দিকে আসামিরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সম্মুখ থেকে বেআইনীভাবে সমবেত হয়ে অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তারা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে “শেখ হাসিনার ভয় নাই”, “রাজপথ ছাড়ি নাই” বলে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় ভুক্তভোগী আইনজীবী মামলার শুনানি শেষ করে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে আসেন। তখন আসামি আনোয়ার শাহাদাৎ শাওন হেলমেট পরিধান করে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করার জন্য পিস্তল তাক করে। আসামি ওয়াকিল লোহার রড দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন।
এছাড়া অন্য আসামিরা স্লোগান দিয়ে বাদীসহ অন্য আইনজীবীদের কিলঘুষি মারে এবং লোহার রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারাত্মক আঘাত করে। আসামিরা বিএনপিপন্থী আইনজীবীগণের চেম্বার ভাঙচুর ও লাখ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। আসামিরা আশপাশের আইনজীবীদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। আসামিরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির চেম্বার ভবন ও ভবনের গুরুত্বপূর্ণ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এক কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করেন।