মঙ্গলবার

,

১৮ই নভেম্বর, ২০২৫

ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন টেসলা ও এক্স (সাবেক টুইটার) প্রধান ইলন মাস্ক। তার দলের নাম “আমেরিকা পার্টি”। দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের বাইরে বিকল্প রাজনীতির মঞ্চ তৈরি করতেই তার এ উদ্যোগ। তবে তার এ ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে সমালোচনা—বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান শিবির থেকে।

ইলন মাস্কের এ রাজনৈতিক উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “ইলন মাস্ককে এভাবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়তে দেখে আমি দুঃখিত… ইতিহাসে কখনও তৃতীয় কোনো দল সফল হয়নি। এটি একেবারেই হাস্যকর।”

তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের দল কেবলমাত্র ভোট বিভক্ত করে এবং মূলধারার বিরোধী দলকে দুর্বল করে তোলে। মাস্ক যদি সত্যিই পরিবর্তন চান, তবে তা রিপাবলিকানদের মধ্যেই সম্ভব।”

ট্রাম্পের মতো করে আমেরিকার অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, মাস্কের রাজনৈতিক উচ্চাশা তার ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দিচ্ছে। তিনি টেসলা ও স্পেসএক্সের শেয়ারের ওপর নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

আরো একধাপ এগিয়ে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আজোরিয়া পার্টনারসের প্রধান নির্বাহী জেমস ফিশব্যাক বলেন, “ইলন মাস্কের উচিত তার ব্যবসার ওপর মনোযোগ দেওয়া, রাজনীতিতে নেমে তার মূল ব্র্যান্ড ঝুঁকিতে ফেলছেন তিনি।”

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইঙ্গিত দেওয়ার পর রবিবার ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠনের ঘোষণা দেন ইলন মাস্ক। তিনি বলেন, “আমরা একদলীয় ব্যবস্থায় বাস করছি, যা প্রকৃত গণতন্ত্র নয়। আমেরিকা পার্টির লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়া এবং আমেরিকায় মধ্যপন্থীদের একটি জোরালো কণ্ঠস্বর তৈরি করা।”

দলের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসে আসন জেতা এবং ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করা।

গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দল গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে ইলন মাস্কের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিলিওনিয়ার উদ্যোক্তা মার্ক কিউবান এবং সাবেক হোয়াইট হাউস কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর অ্যান্থনি স্কারামুচ্চি। এ ছাড়া কিছু মধ্যপন্থী সাবেক রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীও দলটিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকা পার্টি মূলত রিপাবলিকান শিবির থেকেই ভোট কাটবে। কারণ ইলন মাস্ক বিগত কয়েক বছরে ট্রাম্পপন্থী অনেক নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন, যা ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে রক্ষণশীল ভোটারদের মধ্যেই তার জনপ্রিয়তা গড়ে তুলেছে। তবে মাস্ক নিজেকে মধ্যপন্থী বলে দাবি করায় কিছু স্বাধীন ও তরুণ ভোটারদেরও টানার চেষ্টা করছেন তিনি।

ইলন মাস্কের “আমেরিকা পার্টি” দেশটির রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চলেছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান নেতারা একে দেখছেন বিভ্রান্তিকর ও ক্ষতিকর পদক্ষেপ হিসেবে। এখন দেখার বিষয়, এই দল কতটা জনপ্রিয়তা পায় এবং আমেরিকার রাজনীতির দুই দানব শক্তির (রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট) ভারসাম্যে কতটা নাড়া দিতে পারে।