সোমবার

,

১৪ই জুলাই, ২০২৫

ইসরায়েল-ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলায় ফের উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান তীব্র পদক্ষেপ নিয়েছে। তেলআবিবে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে তেহরান, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, দেশটি একদিকে কয়েকশ’ ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়েছে, আবার অন্যদিকে প্রায় ১০০টি ড্রোনও পাঠিয়েছে—যাতে তেল আবিব ও জেরুজালেমে ইসরাইলি সাইরেন বাজতে শুরু করে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, অপারেশন সিভিয়ার পানিশমেন্ট-এর আওতায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে, তবে বিস্ফোরণ ধোয়া ও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি ঘোষণা দিয়েছেন, এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের ওপর উচ্চ পর্যায়ে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।

ইরান শুক্রবার ইসরাইলের বিমান হামলাকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। এর জবাবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানকে সতর্ক করে বলেছেন, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চুক্তি না করলে আরও ‘নিষ্ঠুর হামলা’ আসবে।

এর আগে, ইরানের মাটিতে শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েলের বড় আকারের আক্রমণে সবশেষ ৮৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে হামলায় ৩৪১ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে।

ফার্স নিউজ এজেন্সির তথ্যমতে, রাজধানী তেহরানেই ৭৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৩২৯ জন আহত হয়েছেন।

পৃথকভাবে উত্তর-পশ্চিম ইরানের তাবরিজকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৮ জন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছে।

আনাদোলু এজেন্সির তথ্য অনুসারে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা লক্ষ্য করে ইসরায়েল প্রায় ২০০ বিমান নিয়ে একটি বড় আকারের আক্রমণ শুরু করে। এই হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘সামরিক অভিযান’ যতদিন প্রয়োজন ততদিন অব্যাহত থাকবে।

এদিকে, ইরানে হামলার পর আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে ইসরায়েলি দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল।

আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, নরওয়ে, জার্মানি, নাইজেরিয়া, রাশিয়া, ইউক্রেন ও ফ্রান্সে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসগুলোর এক অভিন্ন বার্তায় বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে মিশনগুলো বন্ধ থাকবে এবং কোনো কনস্যুলার পরিষেবা প্রদান করা হবে না।

অন্যদিকে, ইরানও ‘কঠোর শাস্তির’ হুশিয়ারি দিয়েছে এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে।

হামলার পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন, তিনি ইরানকে ‘একের পর এক সুযোগ’ দিয়েছেন এবং ‘অনেক দেরি হওয়ার আগে’ এখনই চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এই উত্তেজনা তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে, যা ওমানের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত সূত্রের বরাতে আনাদোলু জানিয়েছে, আগামী রবিবার নির্ধারিত ষষ্ঠ দফার পরোক্ষ আলোচনা এখন বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।