সোমবার

,

২রা জুন, ২০২৫

ট্রাম্পের বাড়তি শুল্ক আরোপ আমেরিকার আদালতে স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছিলেন, তা স্থগিত করেছেন দেশটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক আদালত।

আদালতের মতে, প্রেসিডেন্ট তা চাইলেই যেকোনো দেশের পণ্যের ওপর ইচ্ছেমতো শুল্ক বসাতে পারেন না। এসব শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর নির্ধারিত সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন। এ সময় ট্রাম্পের দেওয়া শুল্ককে অবৈধও অ্যাখ্যা দিয়েছেন আদালত।

স্থানীয় সময় বুধবার দেওয়া এক রায়ে আদালত বলেছেন, ঢালাওভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি পণ্যে শুল্ক দিয়ে প্রেসিডেন্ট সাংবিধানিকভাবে তাঁকে দেওয়া এখতিয়ারের সীমা অতিক্রম করেছেন।

এ রায় এসেছে দুটি আলাদা মামলার প্রেক্ষিতে। একটি মামলা করেছে ‘লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার’ নামের একটি আইনগত সংস্থা, যারা ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আইনি লড়াই করে। অপর মামলাটি করেছে আমেরিকার ১৩টি অঙ্গরাজ্য, যারা মনে করে ট্রাম্পের শুল্কনীতি স্থানীয় অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

আদালত বলেছেন, আমেরিকার সংবিধান কংগ্রেসকে বাণিজ্যসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে। প্রেসিডেন্ট তা চাইলেই যেকোনো দেশের পণ্যের ওপর ইচ্ছেমতো শুল্ক বসাতে পারেন না। দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত করতে প্রেসিডেন্ট যে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন, তা কংগ্রেসের ওই বিশেষ ক্ষমতার এখতিয়ারকে ছাপিয়ে যেতে পারে না।

আদালতের এই রায় ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য জোর ধাক্কা হয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রায়ে তিন বিচারকের এক প্যানেল বলেছে, ‘চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপ কার্যকর কি না বা তিনি ঠিক করেছেন না ভুল সে বিষয়ে আদালত কোনো মন্তব্য করছেন না। কিন্তু (প্রেসিডেন্টের এই ক্ষমতা) ব্যবহারের সুযোগ নেই। ফেডারেল আইন এই ক্ষমতা ব্যবহারের অনুমতি দেয় না।’

ম্যানহাটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক আদালতে মূলত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শুল্ক সংক্রান্ত বিবাদের শুনানি হয়। তাদের রায়ের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস কোর্ট অব আপিলস ফর দ্য ফেডারেল সার্কিট এবং শেষ পর্যন্ত আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টেও যাওয়া যায়। অন্য দেশ থেকে আমদানি পণ্যে শুল্ক আরোপকে ট্রাম্প তাঁর চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের মূল হাতিয়ার বানিয়েছেন। তাঁর এ পদক্ষেপের ফলে বিশ্ববাণিজ্য ও শেয়ারবাজারগুলোতে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে।

আমেরিকার পণ্য যে পরিমাণ কেনে, দেশটিতে তার চেয়ে বেশি অর্থের পণ্য বিক্রি করে এমন প্রায় সব দেশের ওপর গত ২ এপ্রিল অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক বসিয়েছিলেন ট্রাম্প। দিনটিকে আমেরিকার ‘অর্থনৈতিক মুক্তির দিন’ হিসেবেও অভিহিত করেছিলেন তিনি।