দীর্ঘ আন্দোলন–সংগ্রাম শেষে ফ্যাসিস্ট বিদায়ের পর এবার দেশ গড়ার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি, সংগ্রাম করেছি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক বহু মানুষ জীবন দিয়েছে। কিন্তু এখন হচ্ছে দেশ গড়ার পালা। দেশের জাতীয় স্বার্থে সব রাজনৈতিক দল মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গঠন করতে হবে।’
রবিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফাউন্ডেশন আয়োজিত ২০২৪ সালের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ছোট ভাই প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোকে স্মরণ করতে গিয়ে তারেক রহমান বলেন, বড় ভাই হিসেবে ছোট ভাইকে নিয়ে গর্ব করার জন্য যা যা থাকা দরকার, কোকোর মধ্যে তার সবই ছিল।
২০২৪ সালে লন্ডনে বছরব্যাপী আয়োজিত প্রতিযোগিতামূলক এই টুর্নামেন্টে ১৬টি দল অংশগ্রহণ করে। টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ‘হবিগঞ্জ ফাইটার’। এই দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন তোফায়েল। রানার আপ হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের নেতৃত্বাধীন ‘গ্রেটার ফরিদপুর’।
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়া, দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া, দেশের বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, সব জনগণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা – এসব বিষয়ে নিশ্চয়ই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ থাকবে না।
বিএনপি সরকার গঠন করলে খেলাধুলাকে স্কুলশিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক কারিকুলামে বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান দলের এই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, শিশু-কিশোরদের ডিভাইস থেকে বিরত রাখতে তাদের খেলাধুলার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।
লন্ডন শহরের বিভিন্ন পার্কের উদাহরণ টেনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘লন্ডনের বড় বড় সবুজ মাঠ ও সেখানে শরীরচর্চার বিভিন্ন উপকরণ দেখে যেমন ভালো লাগে, তেমন কষ্টও হয় যে আমাদের দেশে এই ব্যবস্থাগুলো নেই।
তারেক রহমান বলেন, ঢাকা শহরের ১০০টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রতি ২টি ওয়ার্ডে লন্ডন শহরের আদলে একটি করে সবুজ খেলার মাঠ তৈরি করা হবে। সেখানে শিশু-কিশোরেরা খেলাধুলা এবং বয়স্করা হাঁটাহাঁটি করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে যেকোনো ধরণের খেলাধুলায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যারা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে, তাদের অনুশীলনকাল থেকে শুরু করে পুরো সময়ে সরকারকে আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। দেশের চারটি বিকেএসপিকে আরও বেশি কার্যকর করে সেগুলোর মাধ্যমে সারা দেশ থেকে খেলাধুলায় ট্যালেন্ট শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করার পরিকল্পনার কথাও জানান তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছি। এই নির্বাচনের জন্য আমাদের বহু নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। গুম হয়েছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এটি মানুষের রাজনৈতিক অধিকার। আমরা এর মাধ্যমে এমন একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠান করতে চাই, যেই সরকার মানুষের রাজনৈতিক কল্যাণে কাজ করবে।