আমেরিকার সঙ্গে কাতারের ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে সফরের দ্বিতীয় ধাপে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানির মধ্যে স্বাক্ষরিত একাধিক চুক্তির মাধ্যমে ‘অর্থনৈতিক বিনিময়’ হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বুধবার কাতারের রাজধানী দোহায় এক অনুষ্ঠানে এই চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে কাতার এয়ারওয়েজ ও আমেরিকান বোয়িংয়ের মধ্যে ৯৬ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি রয়েছে। তবে বোয়িং বা কাতার এয়ারওয়েজের পক্ষ থেকে এসব চুক্তির নির্দিষ্ট মডেল বা অর্ডারের ধরনসম্পর্কে স্পষ্ট করে কোনও মন্তব্য আসেনি।
চুক্তি সাক্ষরের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, এটা বোয়িংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ অর্ডার, বোয়িংয়ের জন্য এটি রেকর্ড। কেলি (অর্টবার্গ), অভিনন্দন।
ট্রাম্প আরও জানান, চুক্তির মোট মূল্য ২০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালেও ১৬০টি উড়োজাহাজের জন্য মূল অর্ডারের পরিমাণ এটি।
এছাড়া হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, কাতারের আল উদেইদ বিমানঘাঁটি এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা ও সমুদ্র নিরাপত্তা সুবিধার উন্নয়নে সম্ভাব্য ৩৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের লক্ষ্যে একটি ইচ্ছাপত্রও স্বাক্ষরিত হয়েছে। কাতার আমেরিকায় তাদের প্রতিরক্ষা বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে এবং এই চুক্তির মাধ্যমে তারা জেনারেল অ্যাটমিকসের ড্রোন ও রেথিয়নের অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম কিনবে।
কাতার ও আমেরিকার মধ্যে এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাবও বহন করছে। মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার কৌশলগত মিত্র হিসেবে কাতারের ভূমিকা গত কয়েক বছরে বহুমাত্রিক রূপ নিয়েছে।
ট্রাম্পের এই সফরের পেছনে কেবল কৌশলগত উদ্দেশ্য নয়, ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক সম্পর্কও রয়েছে। দোহার উত্তরে বিলাসবহুল গলফ রিসোর্ট নির্মাণে কাতারের সঙ্গে ট্রাম্প পরিবারের অংশীদারত্ব রয়েছে। এমনকি ট্রাম্পের মনোনীত অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডিও এক সময় কাতারের নিবন্ধিত লবিস্ট ছিলেন।
সম্প্রতি কাতার ট্রাম্পকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বিলাসবহুল বিমান উপহার দিতে চাচ্ছে বলেও সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, যা সম্ভাব্য আইনগত, নৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
কাতার সফর ট্রাম্পের উপসাগরীয় অঞ্চলের সফরের দ্বিতীয় ধাপ। এর আগে প্রথমে সৌদি আরবে সফর করেছেন তিনি। ইসরাইলকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে দেশটিকে আহ্বান জানিয়ে আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি একে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’ এবং তার জন্য ‘ব্যক্তিগত সম্মানের বিষয়’ হবে বলেও উল্লেখ করেন।