যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চিকিৎসা শেষে কাতারে আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। চার মাস পর দলীয় প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরায় সারাদেশে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২৬ মিনিটে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় পৌঁছান বিএনপির চেয়ারপারসন। সকাল থেকেই গুলশানের বাসভবন ফিরোজার সামনে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মত। বেলা সোয়া ১১টায় তিনি বিমানবন্দর থেকে সড়ক পথে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে পথে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা হাতে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান দলের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী।
বিএনপি নেত্রীও গাড়ি থেকে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন। পেছনের আসনে বসেন তার দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি। দীর্ঘ ১৭ বছর পর শাশুড়ির সঙ্গে দেশে ফিরলেন জোবাইদা রহমান।
ফিরোজায় খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান তার পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া বিএনপি নেত্রীর মেডিকেল বোর্ডের সদস্য এফ এম সিদ্দিক, বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ছিলেন সেখানে। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যান্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। পরে কড়া নিরাপত্তার সঙ্গে বিমানবন্দর থেকে বের হন বিএনপির চেয়ারপারসন।
এর আগে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বহনকারী কাতারে আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বেগম খালেদা জিয়ার জন্য গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে ‘ফিরোজা’ পুরোপুরি প্রস্তুত করে রাখা হয়। ফিরোজায় ও তার সামনের সড়কে সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে রাখে। পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ‘চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ)’ এর সদস্যরা।
চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবনে প্রবেশের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সুস্থ ও মানসিকভাবে দৃঢ় রয়েছেন। তার প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করায় তিনি নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।’
এছাড়া ৭ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত লন্ডনে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যমকর্মীদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
