শুক্রবার

,

৯ই মে, ২০২৫

মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় এআই ‘থেরাবট’

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও অন্যান্য মানসিক অসুস্থতার হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। একদিকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মনোরোগ বিশেষজ্ঞের ঘাটতি, অন্যদিকে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতনতার অভাব-এই দুইয়ের ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষ থেকে যাচ্ছে সেবার বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে আমেরিকার ডার্টমাউথ কলেজের গবেষকরা তৈরি করেছেন এআই-ভিত্তিক একটি থেরাপি অ্যাপ ‘থেরাবট’। যা রোগীর মানসিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম।

‘থেরাবট’ এমন একটি প্রযুক্তি যা মানুষের আবেগ বুঝে তার প্রতি উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম। এটি বিশেষভাবে বিষণ্নতা, খাওয়ার সমস্যা বা আত্মবিশ্বাসের অভাবজনিত মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

ব্যবহারকারীরা তাদের অনুভূতি বা সমস্যাগুলো এই অ্যাপে জানানোর মাধ্যমে সহজেই সহায়তা পেতে পারেন। অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, থেরাবট ব্যবহার করে তারা তাদের মানসিক চাপ কিছুটা কমাতে পেরেছেন।
বিশেষ করে এমন সময়ে যখন সশরীরে একজন থেরাপিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব ছিল না। ডার্টমাউথের সহকারী অধ্যাপক ও গবেষক নিক জ্যাকবসন বলেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সংখ্যা ১০ গুণ বাড়ালেও চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। আমাদের নতুন কোনো পথ খুঁজতে হবে।’

‘ইয়ারকিক’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হারবার্ট বেয় জানিয়েছেন, তাদের তৈরি এআই থেরাপিস্ট ‘পান্ডা’ যে কোনো সময় ব্যবহারযোগ্য এবং আত্মহত্যাপ্রবণ আচরণ শনাক্ত করে দ্রুত সহায়তা পাঠাতে পারে।

‘আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (এপিএ)-এর কর্মকর্তা ভাইল রাইট বলছেন, ‘ভবিষ্যতে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ও বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তৈরি এআই থেরাপিস্ট ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।’
তবে শিশু-কিশোরদের জন্য এর নিরাপত্তা নিয়ে কিছু উদ্বেগ রয়েছে। তিনি সতর্ক করেছেন, বাজারের অনেক অ্যাপ কেবল লাভের উদ্দেশ্যে তৈরি এবং এগুলো ব্যবহারকারীদের ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে।
তাই বিশ্বাসযোগ্য, নিরাপদ ও গবেষণানির্ভর অ্যাপগুলোর উন্নয়ন জরুরি। থেরাবটকে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের কথা ভাবছে ডার্টমাউথের গবেষক দল।

যাতে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষও সহজে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন। তবে এখনও আমেরিকান এফডিএ থেরাবটের মতো অ্যাপকে ‘চিকিৎসা যন্ত্র’ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়নি। অনুমোদনের আগে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।