সুরের আবেশে নিউ ইয়র্ক মাতালেন জনপ্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ড. অণিমা রায়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইউএসএ-এর আয়োজনে শনিবার সন্ধ্যায় জ্যামাইকার আশা পার্টি হলে বসে বর্ণাঢ্য এই সঙ্গীতানুষ্ঠান। প্রবাসের ব্যস্ত জীবনে যেন এক চিলতে প্রশান্তি এনে দেয় এই সঙ্গীত সন্ধ্যা।
রবীন্দ্রসঙ্গীত কেবল একটি সঙ্গীতধারা নয়, এ এক অনুভব, এক আত্মিক যাত্রা। এর প্রতিটি সুর, প্রতিটি শব্দ যেন হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসে। প্রেম, বিরহ, ভক্তি, প্রকৃতি, মানবতা জীবনের প্রতিটি অনুভূতিরই মেলবন্ধন ঘটে এই গানে।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে জীবনের কথা বলেছেন, মননের কথা বলেছেন, বলেছেন প্রেম, বিরহ, আশা আর অচেনা মাধুর্যের কথা। ড. অণিমা রায়ের সুরে ছিলো সেই মাধুর্যের ছোঁয়া। তাইতো মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাঁর গান উপভোগ করেন সঙ্গীতপ্রিয় নিউ ইয়র্কবাসী।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অণিমা রায়ের আমেরিকায় আগমন উপলক্ষ্যে একক সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন করে বিশ্ববদ্যালয়টির ইউএসএ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকার আশা পার্টি হলে বসে বিশেষ এই সঙ্গীত আয়োজন। আয়োজক সংগঠনের নেতাকর্মী ও সদস্য ছাড়াও এতে যোগ দেন কমিউনিটির গন্যমান্য ব্যক্তিরা।
ড. অণিমা রায় শুধু গানই করেননি, বরং শেকড়ের গল্প শুনিয়েছেন সুরের ভাষায়। তাঁর রবীন্দ্রচেতনার দীপ্তি, মুগ্ধ করেছে প্রবাসী শ্রোতাদের।
একটা ভালো রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনা মানে, নিজের মধ্যে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকা। তাইতো প্রবাসের কর্মব্যস্ত জীবনের ফাঁকে গানের সুরে নিজেকে উপলব্ধির চেষ্টা করেন আগত শ্রোতারা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কের বিশিষ্ট উদ্যোক্তা দম্পতি এবং আশা গ্রুপের কর্ণধার আকাশ রহমান ও এশা রহমান। গানের মাঝে এক হৃদয়ছোঁয়া মুহূর্তে, খ্যাতিমান রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ড. অণিমা রায়ের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তারা। এই সম্মাননা ছিল শিল্পীর প্রতি প্রবাসী বাঙালিদের ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতার এক নিঃশব্দ প্রকাশ।
আশা গ্রুপের চেয়ারপার্সন এশা রহমান বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটা বিশাল ব্যাপার, ড. অণিমা রায় সেও আমাদের বাংলাদেশের গর্ব। আশা পার্টি হলে আজকের রবীন্দ্র সংগীত সন্ধ্যা আয়োজন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। খুব সুন্দর একটা আয়ােজন চলছে। তিনি আরো বলেন, রবীন্দ্রনাথকে কে না ভালোবাসে! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান প্রত্যেকটা বাঙালি ভালোবাসে। বিদেশীরাও ভালোবাসে- ইংলিশে, হিন্দিতে রবীন্দ্র সংগীত আছে। অনিমা রায় আবার নিশ্চয় নিউ ইয়র্ক আসবেন, আবার আমরা রবীন্দ্রনাথের গান শুনব বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
জীবনের প্রতিটি বাঁকে, প্রতিটি ক্ষণে রবীন্দ্রসঙ্গীত পাশে থাকে। আনন্দে যেমন, তেমনই দুঃখে; ভালোবাসায় যেমন, তেমনই বিচ্ছেদে। এ গান যেমন সময়ের ঊর্ধ্বে, তেমনই প্রজন্মের সীমা ছাড়িয়ে প্রতিনিয়ত নতুনভাবে ধরা দেয় শ্রোতার মনে।