আমেরিকার গাড়ি থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স সব শিল্পই চীনা সরঞ্জামের উপরই নির্ভরশীল। রবিবার ওয়াশিংটন পোস্টের এক বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।
চীনা পণ্যে ব্যাপক শুল্ক আরোপের ফলে দেশটির শিল্প উৎপাদন বাড়ানোর ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচেষ্টা ধাক্কা খাবে। আমেরিকার শিল্পগুলো চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। অস্থির শুল্ক নীতি আমেরিকান কোম্পানিগুলির জন্য পণ্য তৈরি এবং বিক্রি করা কঠিন করে তুলছে
কয়েক মাস ধরে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ দুটি। যদিও আমেরিকানরা সম্প্রতি তাদের সুর নরম করতে শুরু করলেও বেইজিং এখনও অটল। ইতোমধ্যে, শেয়ার বাজারে বিপর্যয় ডেকে এনেছে এবং বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
ট্রাম্পের দাবি, আমেরিকার উৎপাদনের ‘স্বর্ণযুগ’ প্রবেশ করতে তার বাণিজ্য নীতিগুলো অত্যাবশ্যক। কিন্তু বাণিজ্য বিশেষজ্ঞগণ এবং কোম্পানিরা মনে করে বর্ধিত শুল্ক আসলে কিছু শিল্পের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাকে সংকটময় করে তুলবে।
ফ্লোরিডায় চিকিৎসা ডিভাইস, ক্যালিফোর্নিয়ায় সাইকেল উৎপাদনসহ আমেরিকার শিল্প কারখানাগুলো শুধু খেলনা বা ল্যাপটপ তৈরিতে নয় বরং গাড়ি থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স সবকিছু তৈরির জন্য চীনা সরঞ্জামের উপরও নির্ভরশীল।
অর্থনীতিবিদ এবং বাইডেন প্রশাসনের শিল্প কৌশল বিষয়ক সাবেক সিনিয়র উপদেষ্টা সুসান হেলপারের মতে, শিল্পখাতে চীনের বিপুল সক্ষমতা রয়েছে। সাধারণভাবে আমেরিকার যন্ত্রপাতি খাতের অবস্থা ভাল নয়। গত দশকে, চীনের যন্ত্রপাতি শিল্প বিশ্বব্যাপী আধিপত্য বিস্তার করেছে।
চায়না মেশিনারি ইন্ডাস্ট্রি ফেডারেশনের তথ্যানুযায়ী ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের রপ্তানি দ্বিগুণেরও অধিক বৃদ্ধি পেয়ে ৮৬৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
যদিও জার্মানি ঐতিহ্যগতভাবে উন্নত যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় হলেও বিশেষজ্ঞদের মতে চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইউরোপীয় সাথে দ্রুত ব্যবধান কমিয়ে ফেলেছে।
ইউরোপীয় বিশেষজ্ঞরা মনে করেন কোনোভাবেই আমেরিকার শিল্পকারখানায় চীনকে এড়িয়ে চলার কোনো সুযোগ নেই।
আমেরিকার নীতিতে ইউ-টার্নে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ব্যবস্থাকে উল্টে দেওয়ার এবং আর্থিক বাজারকে বিপর্যস্ত করার সাথে সাথে আমেরিকা এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চিত্র দ্রুত খারাপ হচ্ছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে মন্দার আশঙ্কা আরো বেড়েছে। ডলারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে এবং ট্রেজারি ইল্ড বেড়েছে, কারণ সরকারের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে চিন্তিত বিনিয়োগকারীরা দুটিকেই পরিত্যাগ করেছেন।