শনিবার

,

২৬শে এপ্রিল, ২০২৫

চীনা পণ্যে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করল আমেরিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করলেও এই তালিকা থেকে বাদ পড়ে চীন। আরও কঠোর শুল্ক আরোপ করে চীনের বিরুদ্ধে ১২৫ শতাংশ করে বুধবার ঘোষণা দেন ট্রাম্প।

কিন্তু বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের একটি নথিতে চীনা পণ্যকে লক্ষ্য করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চ শুল্ক আরোপের নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, চীনের ওপর ওয়াশিংটন শুল্ক বাড়িয়ে একেবারে ১৪৫ শতাংশ করেছে। চীনের বিরুদ্ধে উচ্চ শুল্কের এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

হোয়াইট হাউসের নথির সূত্র ধরে এএফপি জানায়, কয়েক ডজন দেশের বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য পারস্পরিক শুল্ক আরোপের যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা বৃহস্পতিবার থেকেই কার্যকর হয়েছে। তবে চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক নতুন করে বৃদ্ধি করেছেন তিনি।

প্রথম দফায় ১২৫ শতাংশ করা হলেও হোয়াইট হাউসের নথিতে চীনা পণ্যের আমেরিকার আমদানির ওপর পূর্বের আরোপিত অতিরিক্ত আরও ২০ শতাংশ জুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে চীনের ওপর আমেরিকার শুল্ক আরোপের হার ১৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, ট্রাম্প যদি তার এই ‘‘অপমানজনক’’ শুল্ক নীতি জারি রাখেন, তাহলে চীনও ‘‘শেষ পর্যন্ত’’ লড়াই করবে। ৯ এপ্রিল আমেরিকান পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করে চীন।

চলতি বছর মার্চে প্রথমবার চীনের সব ধরনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। পরে ২ এপ্রিল এক ঘোষণায় জানান, চীনের ওপর ধার্যকৃত শুল্ক ৩৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

প্রতিক্রিয়ায় তার পরের দিনই আমেরিকার পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীন। এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প এবং ৭ এপ্রিল নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে বলেন, বেইজিং যদি মঙ্গলবার ৮ এপ্রিলের মধ্যে এই শুল্ক প্রত্যাহার না করে— তাহলে সব ধরনের চীনা পণ্যের ওপর রপ্তানি শুল্ক আরও ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে এবং ৯ এপ্রিল বুধবার থেকে তা কার্যকর হবে।

বেইজিং ট্রাম্পের হুমকিতে সাড়া না দেওয়ায় বুধবার থেকে চীনা পণ্যের ওপর কার্যকর হয়েছে বর্ধিত শুল্ক। এতে আমেরিকায় চীনা পণ্যের ওপর মোট আরোপিত শুল্ক পৌঁছায় ১৪৫ শতাংশে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই নতুন শুল্কনীতি চীনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের আরও কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিলেও পুরো শুল্ক কাঠামোটি বেশ জটিল হয়ে উঠেছে। কারণ বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভিন্ন হারে শুল্ক আরোপ করায় সামগ্রিক চিত্র বোঝা কঠিন হয়ে পড়ছে।

উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখছেন। বিশ্ববাজারে এর প্রভাব কী হবে, সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। তবে আমেরিকার ভোক্তা ও ব্যবসায়ী মহলে এই নতুন শুল্ক আরোপ নিয়ে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।