শনিবার

,

২২শে মার্চ, ২০২৫

লন্ডন সম্মেলনে ইউক্রেনের পক্ষে থাকার ঘোষণা ইউরোপের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন সংকট নিয়ে জেলেনস্কির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের এক ডজনের বেশি নেতা। সংকট মোকাবিলার উপায় ও পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে সম্মেলন করেছে তারা। রোববার এই সম্মেলনের আয়োজন করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

সম্মেলনে চারটি পদক্ষেপের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে ইউরোপীয় নেতারা। লন্ডনের ল্যাংকেস্টার হাউসে সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। চারটি পদক্ষেপই ইউক্রেনের পক্ষে নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে কিয়ার স্টারমার বলেন, ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য নতুন যেকোনো চুক্তি অবশ্যই জোরালো হতে হবে। আর সব দেশকে নিজেদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা অনুযায়ী ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের দায়িত্ব নিতে হবে এবং নিজেদের দায়িত্ব বাড়াতে হবে।

স্টারমারের ভাষ্য অনুযায়ী, সম্মেলনে ঐকমত্য হওয়ার চারটি পদক্ষেপ হলো—যুদ্ধ চলাকালে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করতে হবে; স্থায়ী শান্তির ক্ষেত্রে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং যেকোনো শান্তি আলোচনার টেবিলে ইউক্রেনকে অবশ্যই রাখতে হবে; শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে কাজ করতে হবে ইউরোপের নেতাদের; ইউক্রেনের সুরক্ষার জন্য একটি জোট গঠন করতে হবে এবং দেশটিতে শান্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এর পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনকে ১৬০ কোটি পাউন্ড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কিয়ার স্টারমার। যুক্তরাজ্যের দেওয়া এই অর্থ খরচ করে ইউক্রেনের জন্য পাঁচ হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র কেনা হবে। ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহার করা হবে।

এর আগে, সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে ইউক্রেনকে ২২৬ কোটি পাউন্ড ঋণ দেওয়ার চুক্তি করে যুক্তরাজ্য। শনিবার, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপস্থিতিতে এই ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী রেচেল রিভস।
চুক্তি অনুযায়ী, পরবর্তীতে মস্কোর সম্পদ জব্দ করে সেই অর্থ ফেরত দেবে কিয়েভ। এসময় ভিডিও লিংকে যুক্ত ছিলেন ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী সার্গেই মার্চেনকো।

স্টারমার বলেন, এখন আমাদের দীর্ঘমেয়াদি শান্তির দিকে এগোতে হবে। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ফ্রান্স এবং সম্ভবত আরও এক–দুটি দেশকে সঙ্গে নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাজ্য।

আজকের সম্মেলনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও জোটের নেতাদের পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অংশ নেন। সম্মেলনে ‘ভালো ও খোলামেলা আলোচনা’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন। তিনি বলেছেন, ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ।’

তিন বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান চলছে। যুক্তরাষ্ট্র এত দিন এই যুদ্ধে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় সহায়তাকারী দেশ হলেও ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর দৃশ্যপট পাল্টে গেছে।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বাকবিতণ্ডার পরই লন্ডনে ইউরোপীয় নেতাদের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।