আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো বাংলাদেশ ও স্বাগতিক পাকিস্তানের।
মঙ্গলবার ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হেরেছিল টাইগাররা। ফলে ২ ম্যাচের দু’টিতেই হেরে বিদায় নিতে হলো বাংলাদেশের। অন্যদিকে, পাকিস্তানকেও বিদায় নিতে হলো ২ ম্যাচের দু’টিতে হেরে যাওয়ায়।
‘এ’ গ্রুপে থেকে ভারতকে নিয়ে সেমিফাইনালে উঠলো নিউজিল্যান্ড।
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ৮ ওভারে ৪৫ রানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও অধিনায়ক শান্ত। ২৪ রানে ব্রেসওয়েলের শিকার হন তানজিদ।
এরপর তিন নম্বরে নেমে ১৪ বলে ১৩ রান করে নিউজিল্যান্ড পেসার উইল ও’রুকের বলে আউট হন মিরাজ।
উইকেটে সেট হতে সাবধানে খেললেও ২৪ বল খেলে মাত্র ৭ রান করে ব্রেসওয়েলের দ্বিতীয় শিকার হন হৃদয়।
৯৭ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে হৃদয় ফেরার পর জোড়া আঘাত সইতে হয় বাংলাদেশকে। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ২ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৪ রানে ব্রেসওয়েলের শিকার হন। এতে ১১৮ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
চাপে পড়া বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান শান্ত ও জাকের আলি। ষষ্ঠ উইকেটে জাকেরের সাথে ৬৭ বলে ৪৫ রান যোগ করেন শান্ত।
এক প্রান্ত আগলে ৭১ বলে ওয়ানডেতে দশম হাফ-সেঞ্চুরি করেন শান্ত।
দলীয় ১৬৩ রানে শান্ত ফেরার পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন জাকের, রিশাদ হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। রিশাদের ২৬ ও তাসকিনের ১০ এবং জাকেরের ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৫ বলে ৪৫ রানে ভর করে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩৬ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
বল হাতে নিউজিল্যান্ডের ব্রেসওয়েল ১০ ওভারে ২৬ রানে ৪ উইকেট নেন। এটিই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ব্রেসওয়েলের। এছাড়া ও’রুর্ক ৪৮ রানে ২ উইকেট নেন।
২৩৭ রানের জবাবে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন ওপেনার উইল ইয়ং।
চতুর্থ ওভারে নিউজিল্যান্ডের সেরা ব্যাটার কেন উইলিয়ামসনকে ৫ রানে শিকার করেন রানা।
১৫ রানে ২ উইকেট পতনের পর নিউজিল্যান্ডের রানের চাকা সচল রাখেন আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়েল ও রাচিন। ৬টি চারে ৩০ রান করে পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের বলে বোল্ড হন কনওয়ে।
৭২ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে কনওয়ে ফেরার পর নিউজিল্যান্ডের জয়ের পথ তৈরি করেন রাচিন ও টম লাথাম। চতুর্থ উইকেটে ১৩৬ বলে ১২৯ রান যোগ করে দু’জনে। এই জুটিতেই ৯৫ বলে ওয়ানডেতে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি করেন রাচিন। অবশ্য ব্যক্তিগত ৯৩ রানে রানার বলে মিরাজের হাতে জীবন পান রাচিন।
সেঞ্চুরির পর ব্যক্তিগত ১০৫ রানে আবারও ক্যাচ দিয়ে জীবন পান রাচিন। এবার বোলার ছিলেন মুস্তাফিজ, ফিল্ডার ছিলেন মাহমুদুল্লাহ।
দ্বিতীয়বার জীবন পেয়ে শেষ পর্যন্ত স্পিনার রিশাদের বলে ১১২ রানে আউট হন রাচিন। ১০৫ বলে ১২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি।
রাচিন ফেরার পর রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন ৩টি চারে ৫৫ রান করা লাথাম। এ সময় ৫০ বলে ২৩ রান দরকার ছিলো নিউজিল্যান্ডের। ষষ্ঠ উইকেটে ২৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে কিউইদের জয় নিশ্চিত করেন ফিলিপস ও ব্রেসওয়েল। ফিলিপস ২১ ও ব্রেসওয়েল ১১ রানে অপরাজিত থকেন।
বাংলাদেশের তাসকিন, মুস্তাফিজ, রানা ও রিশাদ ১টি করে উইকেট নেন।
২৭ ফেব্রুয়ারি গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ২৩৬/৯, ৫০ ওভার (শান্ত ৭৭, জাকের ৪৫, ব্রেগরয়েল ৪/২৬)।
নিউজিল্যান্ড : ২৪০/৫, ৪৬.১ ওভার (রাচিন ১১২, লাথাম ৫৫, তাসকিন ১/২৮)।
ফল : নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী।