শনিবার

,

২২শে মার্চ, ২০২৫

হৃদয়ের সেঞ্চুরি ম্লান করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচ জিতল ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের মিশন মোটেও ভালো হয়নি। তাওহিদ হৃদয়ের সেঞ্চুরিতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখ রক্ষা হয়। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ২২৮ রানের পুঁজি যে তেমন কিছু না, তা দেখা গেল খেলায়। অল্প রানের জবাবে দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ২২৯ রানের লক্ষ্যমাত্র স্পর্শ করে ভারত। ৬ উইকেটের জয় এনে দিলেন ওপেনার শুভমান গিল। ভারতের জয়ে অবদান রাখা গিল ১০১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ২ রান তোলে টাইগাররা। প্রথম ওভারের শেষ বলে সৌম্য সরকার এবং বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট হারানো মেনে নিতে পারছিল না বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।

চার নম্বরে ব্যাট হাতে নামা মেহেদি হাসান মিরাজ ও ওপেনার তানজিদ হাসান জুটিতে ২৮ বলে ২৪ রান যোগ হবার পর সাজঘরে ফিরেন মিরাজ।

আর নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে তানজিদ হাসানকে এবং মুশফিকুর রহিমকে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরিয়ে দেন স্পিনার অক্ষর প্যাটেল।

দলীয় ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন হৃদয় ও জাকের।

৩৬তম ওভারের প্রথম ডেলিভারিতে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করেন ৮৭ বল খেলা জাকের। পরের ওভারে অষ্টম ওয়ানডে হাফ-সেঞ্চুরি করেন হৃদয়। তিনি খেলেন ৮৫ বল।

হাফ-সেঞ্চুরির পর রানের গতি বাড়িয়েছেন হৃদয় ও জাকের। ৪৩তম ওভারে জাকেরকে শিকার করে ভারতকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন সামি। ষষ্ঠ উইকেটে ২০৬ বলে ১৫৪ রান যোগ করেন হৃদয় ও জাকের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে ষষ্ঠ বা তার নিচের দিকে এবং ভারতের বিপক্ষে যেকোন উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি। ৪টি চারে ১১৪ বলে ৬৮ রান করেন জাকের।

দলীয় ১৮৯ রানে জাকের ফেরার পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন আট নম্বরে নামা রিশাদ।

রিশাদ যখন ফিরেন, তখন ৯০ রানে দাঁড়িয়ে হৃদয়। এরপর তানজিম হাসান শূন্য ও তাসকিন আহমেদ ৩ রানে বিদায় নিলেও সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন হৃদয়। ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে ৩৪ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান হৃদয়।

শেষ পর্যন্ত শেষ ওভারের চতুর্থ বলে রানার বলে আউট হন হৃদয়। ইনিংসের ২ বল বাকী থাকতে ২২৮ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ১১৮ বলে ১০০ রান করেন হৃদয়।

ভারতের সফল বোলার সামি ১০ ওভারে ৫৩ রানে ৫ উইকেট নেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ ও বাংলাদেশের বিপক্ষে এই প্রথমবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন সামি। এছাড়া রানা ৩টি ও প্যাটেল ২টি উইকেট নেন।

জবাবে ২২৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ভারতকে ৫৯ বলে ৬৯ রানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। এরমধ্যে ৭টি চারে ৩৬ বলে ৪১ রান করে পেসার তাসকিনের শিকার হন ভারত অধিনায়ক রোহিত।

দ্বিতীয় উইকেটে বিরাট কোহলিকে নিয়ে ৭৭ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়ে ভারতকে ভালো অবস্থায় রাখেন গিল। ৩২ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে ভারত।

কোহলিকে ২২ ও অক্ষর প্যাটেলকে ৮ রানে বিদায় করেন স্পিনার রিশাদ হোসেন। শ্রেয়াস আইয়ারকে ১৫ রানে থামান পেসার মুস্তাফিজুর। ১৪৪ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ভারত।

এরপর পঞ্চম উইকেটে জুটি গড়ে সফল হন গিল ও লোকেশ রাহুল। তবে ৩৭তম ওভারে তাসকিনের বলে রাহুলের সহজ ক্যাচ ফেলেন জাকির। ব্যক্তিগত ৯ রানে জীবন পেয়ে গিলের সাথে ৯৮ বলে ৮৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ২১ বল বাকী থাকতে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন রাহুল।

১২৫ বলে ওয়ানডেতে অষ্টম সেঞ্চুরি পূর্ণ করা গিল শেষ পর্যন্ত ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ১২৯ বলে ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন। ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৭ বলে অপরাজিত ৪১ রান করেন রাহুল। ম্যাচ সেরা হন গিল।

বাংলাদেশের রিশাদ ৩৮ রানে ২টি, তাসকিন ও মুস্তাফিজ ১টি করে উইকেট নেন।

২৪ ফেব্রুয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ২২৮/১০, ৪৯.৪ ওভার (হৃদয় ১০০, জাকের ৬৮, সামি ৫/৫৩)।
ভারত : ২৩১/৪, ৪৬.৩ ওভার (গিল ১০১*, রোহিত ৪১, রাহুল ৪১*, রিশাদ ২/৩৮)।
ফল : ভারত ৬ উইকেটে জয়ী।