রবিবার

,

২৩শে মার্চ, ২০২৫

গাজা যুদ্ধবিরতি বাতিলের হুমকি ট্রাম্পের

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অবসানের হুমকি দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছেন ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হামাস যদি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে তিনি এ চুক্তি শেষ করে দিতে পারেন।

ট্রাম্প সোমবার বলেন, ‘ইসরায়েলকে ওখানে নরকের যন্ত্রণা বইয়ে দিতে বলব। ইসরায়েল ওই পরিস্থিতি পার হয়ে আসতে পারবে।’ তবে তিনি এটাও জানান, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইসরায়েলকেই নিতে হবে।

ট্রাম্প দাবি করেন, একসঙ্গেই সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। দফায় দফায় তিন-চারজন করে জিম্মি মুক্তির বিষয়টির সঙ্গে একমত নন তিনি।

তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগেই হামাস তাদের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে ১৫ ফেব্রুয়ারি জিম্মি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে একটি ঘোষণা দেয়। ‘ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে’ এই কারণ দেখিয়ে বলা হয়, জিম্মি মুক্তি দেওয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। এই ঘোষণার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প জানান, গাজা থেকে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের গ্রহণ না করলে তিনি জর্দান ও মিসরে ত্রাণ পাঠানো বন্ধ করে দেবেন।

চলতি সপ্তাহের শেষভাগে প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাবেন আমেরিকার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

এর আগে সোমবার তিনি ওয়াশিংটনে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আব্দেলাত্তির সঙ্গে বৈঠক করেন। রুবিওকে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আরব দেশগুলো একজোট হয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা নাকচ করেছে। অর্থাৎ ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে অন্য কোনো দেশে পাঠানোর উদ্যোগে রাজি নয় দেশগুলো।

ট্রাম্প জর্দানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করবেন বলে কথা রয়েছে।

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির জবাবে হামাসের এক জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে মনে রাখতে হবে, যদি তিনি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি চান, তাহলে উভয় পক্ষকেই চুক্তির শর্ত মেনে চলতে হবে। সামি আবু জুহরি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এ ধরনের হুঁশিয়ারির কোনো মূল্য নেই। এটি শুধু বিষয়টিকে জটিল করছে।

এদিকে, হামাসের এই ঘোষণার পর সেনাদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।

তিনি জানান, তারা যে কোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত আছেন।

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫১ জনকে গাজায় তুলে নিয়ে জিম্মি করে। এরপর ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। ৭৩ ইসরায়েলি এখনো গাজায় জিম্মি রয়েছেন। গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। সেই থেকে ১৬ ইসরায়েলি ও পাঁচ থাই নাগরিককে জিম্মিদশা থেকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েল ৫৬৬ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে।