মঙ্গলবার

,

১৮ই নভেম্বর, ২০২৫

সিরিয়ায় আসাদ যুগের অবসান, রাশিয়ায় আশ্রয়

এটিভি ইউএসএ নিউজ ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের পাঁচ দশকের শাসনকালের অবসান হয়েছে। একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। দীর্ঘ সময়কার স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়েছে ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা। সিরিয়া থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত বিমানে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে গতকালই রাশিয়ার মস্কোতে পাড়ি জমান বাশার আল-আসাদ। রুশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বাশার ও তার পরিবারের সদস্যরা মস্কোয় পৌঁছেছেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে রাশিয়া তাঁদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে।

রবিবার সকাল থেকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের বড় অংশ চলে যায় বিদ্রোহী বাহিনী দখলে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী ঘোষণা করে, ‘দামেস্ক এখন আসাদ-মুক্ত’। সেখানকার বিরোধীরাও একই ঘোষণা করেছে।

বিদ্রোহীরা বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে থাকবে। আসাদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি বলেছেন, জনগণের নির্বাচিত নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে তিনি প্রস্তুত।

সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাবেন না।

তবে আসাদ সরকারের পতনের পর দেশটির পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রবিবার সকাল থেকেই দামেস্কের রাস্তায় বিভিন্ন ছবি ধরা পড়েছে। দামেস্কজুড়েই বিদ্রোহী বাহিনী এবং আসাদ-বিরোধীদের উচ্ছ্বাস চোখে পড়েছে। সিরিয়ার জাতীয় টেলিভিশন অফিস দখল করে নেন বিদ্রোহী বাহিনী। এর পাশাপাশি কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্তি দিয়ে নথি পুড়িয়েছেন বিদ্রোহীরা।

রাজধানী দামেস্কের আগে সিরিয়ার একাধিক শহর বিদ্রোহীদের দখলে চলে যায়। শনিবারই হোমস শহর পুরোপুরি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এটি সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর। অবস্থানের দিক থেকে এই শহরের গুরুত্ব অনেক। এর আগে আলেপ্পো এবং হামা শহরও আসাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে যায়। তার পর থেকেই আসাদের পতন এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট আসাদের বাসভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছে লোকজন। চুরি করে নিয়ে গেছে অনেক সরঞ্জাম। সেখানে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলতে দেখা গেছে অনেককে। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি ভবনে লুটপাট চালানো হয়েছে।

এদিকে এইচটিএসের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি বলেছেন, ‘পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ নেই এবং ভবিষ্যৎ আমাদের হাতে।’

এর আগে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করাই তাদের লক্ষ্য।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন হাফেজ় আল-আসাদ। তখন থেকেই সিরিয়ায় ‘আসাদ যুগের’ শুরু হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পর ২০০০ সালে ক্ষমতায় বসেন বাশার। ২০১১ সালে প্রথম তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। অবশেষে সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমেই ২০২৪ সালে সিরিয়ায় অবসান হলো আসাদ যুগের।