দেশের তৈরি পোশাক খাতে দিন দিন কমছে নারী শ্রমিক। যদিও এ খাত গত এক দশকে অনেক বেশি পুঁজিঘন হয়েছে এবং শিল্পটিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। দেখা গেছে, শ্রমিকপ্রতি কমেছে যন্ত্রের সংখ্যা। আর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে মেশিন অপারেটর ও হেলপারদের ওপর, যার অধিকাংশই নারী। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত চার দিনব্যাপী গবেষণা সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন এ তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে ৭ থেকে ১০ ডিসেম্বর এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
‘টেকনোলজি আপগ্রেডেশন অব দ্য আরএমজি ইন্ডাস্ট্রিজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক উপস্থাপনায় বিআইডিএসের গবেষক কাজী ইকবাল জানান, দেশের তৈরি পোশাক খাতে নারীর অংশগ্রহণ কমছে। ২০১৪ সালে দেশের এ খাতের শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ ছিল ৫৬ শতাংশ, ২০২৩ সালে যা ৫৩ শতাংশে নেমে আসে। দেখা যাচ্ছে, গত ১০ বছরে তৈরি পোশাক খাতের বেশির ভাগ উপখাতে নারীর অংশগ্রহণ কমেছে। এ খাতের আটটি উপখাতের মধ্যে ছয়টিতে নারীর অংশগ্রহণ কমেছে; বেড়েছে কেবল দুটিতে।
কাজী ইকবাল আরো বলেন, ‘তৈরি পোশাকের উপখাতগুলোর মধ্যে কেবল হোম টেক্সটাইল ও ওভেন খাতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। বাকি ছয়টি খাত অর্থাৎ নিট লিনজারি, ডেনিম ট্রাউজার, সোয়েটার, টি-শার্ট, জ্যাকেট, ওভেন ট্রাউজার ও ওভেন শার্টে কমে গেছে নারী শ্রমিকের অংশগ্রহণ। সবচেয়ে বেশি কমেছে জ্যাকেটে। এ উপখাতে ২০১৪ সালে নারী শ্রমিক ছিল ৬৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, ২০২৩ সালে যা কমে দাঁড়ায় ৩৯ দশমিক ২২ শতাংশে।’
উপস্থাপনায় বলা হয়, উৎপাদন খাতে গত ১০ বছরে প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট কর্মসংস্থান বেড়েছে। বিএসসি, ডিপ্লোমা টেক্সটাইল প্রকৌশলী, বিএসসি শিল্প প্রকৌশলী ও ডিপ্লোমা শিল্প প্রকৌশলীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে টেক্সটাইল প্রকৌশলে নারীর সংখ্যা খুবই নগণ্য।
বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক কাজী ইকবাল বলেন, ‘নারীরা কোথায় কোথায় প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে সমস্যার মুখে পড়ছেন, তা চিহ্নিত করে তাদের নতুন দক্ষতা শেখানো দরকার। তাহলে নারীদের ঝরে পড়ার হার রোধ করা সম্ভব।’
ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদ জহিরের সঞ্চালনায় দ্বিতীয় দিনের এ অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহতাব উদ্দিন, বিআইডিএসের গবেষণা সহযোগী জায়েদ বিন সাত্তার, মাহির এ. রহমান প্রমুখ।